ভারতের উত্তর প্রদেশের মীরাটের কথিত ‘Love Jihad’-এর ঘটনা নাটকীয় মোড় নিয়েছে। এতদিন এ নিয়ে রাজ্য তথা দেশজুড়ে হিন্দুত্ববাদী দলগুলো তোলপাড় করলেও এবার আসল রহস্য ফাঁস হয়ে গেল। এতদিনের অভিযোগকারী সেই তরুণী স্থানীয় থানায় গিয়ে তার পরিবারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সিটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ২২ বছর বয়সী ওই তরুণী জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, তিনি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছাতেই কালিমের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন। তাকে জোর করে গণধর্ষণ বা ধর্মান্তরিত করা হয়নি। শুধু তাই নয়, ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘বাড়িতে তাকে প্রবল চাপ দেয়া হয়েছে। প্রাণহানির আশংকা করছেন তিনি। এমনকি তার পরিবারের লোকজন তাকে মারধরও করেছে।’
এই মর্মে অভিযোগ করার পর আপাতত তাকে একটি মহিলা হোম ‘Naree Niketon’-এ রাখা হয়েছে। মীরাটের এসএসপি ওমকার সিং জানিয়েছেন, তরুণীর আগের জবানবন্দির ভিত্তিতেই চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলাটি আপাতত আদালতে বিচারাধীন।
হিন্দুত্ববাদী দল বিশেষ করে বিজেপি এবং অন্যান্য সংগঠন এই ঘটনাকে লুফে নিয়ে ব্যাপক বিদ্বেষমূলক প্রচারণা শুরু করে দেয়। উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যে সম্প্রতি শেষ হওয়া বিধানসভা উপনির্বাচনে এই ঘটনাকে ‘Love Jihad’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। এ ব্যাপারে বিজেপি এমপি যোগী আদিত্যনাথ ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়।
পরবর্তীতে বিজেপি এমপি হরিসাক্ষী মহারাজ, বিধায়ক ঊষা ঠাকুর প্রমুখ কথিত ‘Love Jihad’ নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালান। অবশেষে ওই তরুণী রোববার স্থানীয় মহিলা থানায় গিয়ে এবং তারপরে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জবানবন্দি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, ‘কেউ তাকে জোর করে গণধর্ষণ করেনি বা ধর্মান্তরিতও করেনি।’ এই বিবৃতি সামনে আসার পর এখন বিজেপি বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন।